Information Technology

This Awesome Blogger Let's be friends and spread the love
together in the world.
Join us on

যেভাবে ওডেস্কে আমি প্রথম কাজটি পাই… [শুধুমাত্র নতুনদের জন্য |

আমি ফ্রিল্যান্সিং কাজ করি এটা জানার পর অনেকেই আগ্রহ নিয়ে জানতে চায়- আমার প্রথম কাজটি পাওয়ার ব্যাপারে। মানে প্রথম কাজটি পেতে আমার কতদিন লেগেছিলো, কীভাবে পেয়েছিলাম, কারও সহযোগিতা লেগেছিলো কিনা, কত ডলারের কাজ ছিলো সেটি, কোন মার্কেটপ্লেস থেকে পেয়েছি ইত্যাদি ইত্যাদি। আজকে সেসব প্রশ্নের উত্তরগুলোই লিখবো।

আমার প্রথম কাজ পাওয়ার পূর্বের গল্প

আমি প্রথম কাজ পাই ওডেস্ক মার্কেটপ্লেসে। সে কথা বলার আগে তার পূর্বের কাহিনী কিছুটা বলে নিই। এতে করে আপনাদের বুঝতে সহযোগিতা হবে। বেশ কয়েকটা চাকরি করে কোনোটাতেই স্থিতু হতে পারছিলাম না। সবসময় বসের ঝারি খেতে হতো। কারণ সময়মতো আমি অফিসে কোনোদিনও যেতে পারতাম না। সকালবেলা ঘুম থেকে জাগা সত্যিই এক কঠিন কাজ ছিলো। আমার মনে হতো, কেন অফিসগুলো সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হয়ে রাত ২/৩ টা পর্য়ন্ত হয় না?
এই সময়ই আমি আমার পছন্দমতো একটা জব পেলাম- কলসেন্টার জব। অফিস টাইম রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্য়ন্ত। কিন্তু হায়! রাত জাগা যখন বাধ্যতামূলক হয়ে গেলো তখন দেখি আর রাত জাগতে ভালো লাগে না! ৫ মাস কলসেন্টারে জব করেই জব ছেড়ে দিতে বাধ্য হলাম। তারপর জব নিলাম আইটি প্রতিষ্ঠানে। স্যালারি সময়মতো পেতাম না বলে ওটা ছেড়ে দিয়ে পত্রিকায় জব নিই। কিন্তু কিছুদিন করার পর বিরক্ত লাগা শুরু হয়। কাজের মধ্যে কোনো ভেরিয়েশন, ক্রিয়েটিভিটি নাই।
সব জব-টব ছেড়ে দিয়ে দুই মাস বেকার জীবন কাটালাম। তারপর চিন্তা করলাম ফ্রিল্যান্সিং কাজের। ওডেস্কে আগেই একাউন্ট ছিলো। এক বড় আপুর তত্বাবধানে একাউন্টটা ভালো করে সেটাপ করলাম। তারপর নিজের কিছু কাজের স্যাম্পল দিয়ে সাজালাম। শুরু হলো অন্য এক জীবন।

ওডেস্কে প্রথম কাজ পাওয়ার গল্প

একাগ্রভাবে লেগে রইলাম ওডেস্কে। রাত নাই, দিন নাই। প্রায় ১৬/১৭ ঘণ্টা জেগে থাকি পিসির সামনে। ৩/৪ ঘণ্টা ঘুমিয়ে আবারও জেগে উঠি। মনে হয়, এই বুঝি কোনো ইন্টারভিউ আসলো! এভাবে প্রতিদিন বেছে বেছে বিভিন্ন কাজে বিড করি। কিন্তু কাজ দেয়া তো দূরের কথা, কোনো ক্লায়েন্ট ইন্টারভিউতেই ডাকে না।
এক সময় চিন্তা করলাম নিজের অবস্থান নিয়ে। চেষ্টা তো কম করি নাই। কিন্তু সমস্যাটা কোথায়? ওয়ার্ডপ্রেসে ভালো কাজ পারি। ইভেন যেগুলোতে বিড করি, সেগুলো ভেরি ইজি কাজ। আমি খুব ভালোভাবেই সেগুলো করতে পারবো। কিন্তু কাজ পাই না কেন? গুগলে সার্চ করলাম অনেক। এবার কিছু পয়েন্ট পেয়ে গেলাম। ওডেস্কে নিজের কভার লেটারটা সাজালাম ভালো করে। এক বড় ভাইকে দিয়ে কভার লেটারটার প্রুফ করে নিলাম। আর ওয়ার্ডপ্রেসের দুটা টেস্ট দিলাম। এর মধ্যে একটাতে টপ টেন স্কোর অন্যটাতে টপ টুয়েন্টি স্কোর পেলাম।
আর এরপরই আমার ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেলো। দিনটি ছিলো ২৮ জুন ২০১১, ওডেস্কে প্রথম কাজ পাই আমি। মাত্র ২০ ডলারের কাজ ছিলো সেটি। ইউকে’র সেই ক্লায়েন্ট আমার কাজে এতো খুশি হয়, আমাকে ৫ তারকা ফিডব্যাকসহ সুন্দর মন্তব্য লিখে দেয়। এবং মজার কথা হচ্ছে- ঐ ক্লায়েন্ট এখনও আমাকে কাজ দেয় এবং সেটা মার্কেটপ্লেসের বাইরেই। ২০ ডলারের সেই ক্লায়েন্ট এখন আমাকে অনায়াসে ১৪০০ ডলারের কাজ দিয়ে দেয় ওডেস্ক/আপওয়ার্ক ছাড়াই। চাইলেই ১০০% এডভান্সও দেয়। মজা না?
তো যা বলছিলাম। সেই মাসে ঐ ক্লায়েন্টের আরেকটা কাজ করি সেই প্রাইসে। ওডেস্কের চার্জ বাদ দিয়ে সেই মাসে আমার ইনকাম হয় ৩৬ ডলার। এমাউন্ট অল্প। কিন্তু আমার আত্মবিশ্বাসের পরিধি তখন হাজারগুণ ছাড়িয়ে গেছে। ঐ বছরের শেষ মাসে আমার ইনকাম ছিলো ৯৭০ ডলার। যা আমার কাছে সত্যিই বিস্ময়কর ছিলো।

যেভাবে আয় করা ডলার নিজের হাতে পেলাম

আমার ওডেস্ক একাউন্টে যখন ১১২ ডলার জমা হয়, তখন আমি চিন্তা করি আয় করা ডলার ক্যাশ করার ব্যাপারে। তখন ওডেস্ক থেকে সরাসরি অর্থ ব্যাংকে আনা যেতো না। এখন যায়। পেপাল তো আমাদের দেশে নাই-ই। তো আমি চিন্তা করলাম পেওনিয়ার মাস্টারকার্ড-এর মাধ্যমে আমি ডলারগুলো ক্যাশ করবো। কিন্তু একাউন্ট কারও রেফারেলে করলে ২৫ ডলার বোনাস পাওয়া যায় সেটা জানতাম না তখন। তাই ওডেস্কের মাধ্যমে পেওনিয়ার একাউন্ট করি। যার ফলে আজীবনের জন্য একটা ধরা খাই। কারণ কোনো মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে পেওনিয়ার একাউন্ট করলে ২৫ ডলার বোনাস তো পাওয়া যায়-ই না, সেই সাথে কার্ডের সব সুবিধা পাওয়া যায় না। যেমন- আপনার কার্ড থেকে অন্য কার্ডে ডলাার সেন্ড বা রিসিভ কোনোটাই পারবেন না!
নোট: পেওনিয়ার মাস্টারকার্ডের জন্য সাইনআপ করতে পারেন এখান থেকে:পেওনিয়ার মাস্টারকার্ড ফ্রি সাইন আপ। তাহলে মাস্টারকার্ডের সব সুবিধা পাবেন। সেই সাথে কার্ডে যখন মোট ১০০ ডলার লোড হবে, ২৫ ডলার বোনাস পাবেন।
তারপর ওডেস্ক থেকে পেওনিয়ারে ডলার লোড দিই। পেওনিয়ারে ডলার আসতে ২ ডলার খরচ হয়, কিন্তু বর্তমানে ব্যাংকে ডলার আনতে ৫ ডলার লাগে। তাই পেওনিয়ারই আমার বেশি পছন্দ। যাইহোক, পেওনিয়ারে ডলার আসার পর আমি ব্রাক ব্যাংকের বুথে যাই টাকা তুলতে। মনে আছে খুব ভয়ে ভয়ে গিয়েছিলাম। টাকা ক্যাশ করে যখন বাসায় ফিরছিলাম, মনে হচ্ছিলো- আমার চেয়ে সুখী মানুষ বুঝি এই পৃথিবীতে আর কেউ নাই!

শেষ কথা

বর্তমানে ফ্রিল্যা্ন্সিং কাজ করি। মনে শান্তি। মাঝে মাঝে বেড়াতে যাই। কখনও দেশে কখনও দেশের বাইরে। আলহামদুলিল্লাহ, খুবই ভালো আছি। আমার এই লেখা থেকে যদি কেউ কোনো ইনস্পাইরেশন পান, সেটাই আমার প্রাপ্তি। কারণ আমি জানি, উৎসাহ ছাড়া কখননোই ভালো কিছু করা সম্ভব নয়। হয়তো আপনি অনেক জানেন, কিন্তু উৎসাহের অভাবে কিছুই করা হয় না।
এছাড়াও আমার কোনো সহযোগিতা লাগলে মন্তব্য করে জানান, আমার যথাসাধ্য সহযোগিতা পাবেন ইনশাল্লাহ। আর আমার একটা ব্লগ আছে, সেখানে আমার বিস্তারিত অভিজ্ঞতা, অনলাইন কাজ সম্পর্কে আরও বিশদ জানতে পারবেন সেই আইডিয়াবাজ.কমসাইট থেকে। প্রয়োজন মনে করলে ঘুরে আসতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে গিয়ে আমি অনেকেরই হেল্প পেয়েছি। যার কাছেই গিয়েছি কেউ আমাকে ফিরিয়ে দেয়নি। তাই আমিও প্রতিজ্ঞা করেছি, যথাসাধ্য হেল্প করবো সবাইকে।
আপনাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা পেলে আবারও লিখবো। ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।

Share this:

ABOUT ME

Hi all. This is My Frist Blog. We're providing content for Bold site and we’ve been in internet, social media and affiliate for too long time and its my profession. We are web designer & developer living Bangladesh! What can I say, we are the best..

JOIN CONVERSATION

    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments :